ঢাকা,বৃহস্পতিবার, ২ মে ২০২৪

চকরিয়ায় নতুন মাতামুহুরী সেতু নির্মাণে এপ্রোচ অংশের শতাধিক ব্যক্তিগত দোকানপাট উচ্ছেদ

চকরিয়ায় নতুন মাতামুহুরী সেতু নির্মাণে দুই এপ্রোচ অংশে অভিযান চালিয়ে শতাধিক স্থাপনা অপসারণ করা হয়েছে।

এম.জিয়াবুল হক, চকরিয়া ::

কক্সবাজার-চট্টগ্রাম মহাসড়কের চকরিয়ায় নির্মাণ কাজের শুরুতে গতকাল বৃহস্পতিবার নতুন মাতামুহুরী সেতুর দুই এপ্রোচ অংশে শতাধিক ব্যক্তিগত মালিকানাধীন দোকানপাট ও বসতঘরসহ স্থাপনা উচ্ছেদ করা হয়েছে। সেতু নির্মাণ কাজে নিয়োজিত ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের পক্ষথেকে সকাল ১০টা থেকে দুপুরে একটা পর্যন্ত চালানো অভিযানে চকরিয়া পৌরশহরের পুরাতন বাসস্টেশন এবং মাতামুহুরী নদীর দুই অংশের অন্তত শতাধিক স্থাপনা উচ্ছেদ করা হয়েছে।

তবে অনেকের অভিযোগ করেছেন, আমাদের জায়গা অধিগ্রহন করা হলেও এখনো ক্ষতিপুরণের টাকা পাইনি। এনিয়ে ভুক্তভোগী লোকজনের মাঝে চরম ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। গতকাল উচ্ছেদ অভিযানকালে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের লোকজনের সঙ্গে অনেকের বাগ্বিতন্ডাও হয়েছে।

কক্সবাজার সড়ক ও জনপথ বিভাগ জানায়, ‘ক্রস বর্ডার রুট নেটওয়ার্ক ইমপ্রুভমেন্ট প্রজেক্ট’ এর আওতায় কক্সবাজার-চট্টগ্রাম মহাসড়কের চকরিয়া উপজেলার মাতামুহুরী সেতু ছাড়াও একই সড়কে চারটি সেতু নির্মাণ কাজ চলছে। এই চারটি সেতুর নির্মাণ ব্যয় ধরা হয়েছে ৭৩৫ কোটি টাকা।

নতুন মাতামুহুরী সেতুটি ছয় লেনে নির্মাণ হবে। সেতুর এপ্রোচ সড়ক নির্মাণের জন্য অনেক আগে কক্সবাজার জেলা প্রশাসনের এলএ শাখার মাধ্যমে জমি অধিগ্রহন করা হয়েছে। এ জন্য ইতোমধ্যে জমি ও স্থাপনার মালিকদের ক্ষতিপূরণের টাকা পরিশোধ করা হয়েছে। এরপরই স্থাপনা অপসারণে অভিযান চালানো হয়েছে।

মাতামুহুরী সেতুর একেবারে নিকটে চকরিয়ার জমজম হাসপাতালের সামনের বেশকিছু জায়গা অধিগ্রহণের আওতায় পড়েছে কক্সবাজার সদর হাসপাতালের সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সোলতান আহমদ সিরাজীর। গতকাল দুপুরে ঘটনাস্থলে তিনি বলেন, আমার ভূমি ও স্থাপনা অধিগ্রহন করা হলেও আমি ক্ষতিপূরণ পাইনি। আমার চারটি দোকান অপসারণ করা হয়েছে। অপসারণের পূর্বে কোনো নোটিশও দেওয়া হয়নি। একারণে কোনো মালামাল সরাতে পারিনি।

সরেজমিনে অভিযানস্থলে দেখা গেছে, শুধু সোলতান আহমদ সিরাজী নন, এ ধরণের ক্ষতিপুরণের টাকা এখনো হাতে পায়নি আশপাশ এলাকার অন্তত ৩০ থেকে ৪০জন ভুক্তভোগী জায়গার মালিক।

ওইসময় ভুক্তভোগী অনেকের অভিযোগ করেছেন, আমাদের জায়গা অধিগ্রহন করা হলেও এখনো ক্ষতিপুরণের টাকা পাইনি। এনিয়ে ভুক্তভোগী লোকজনের সঙ্গে উচ্ছেদ অভিযানকালে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের লোকজনের সঙ্গে অনেকের বাগ্বিতন্ডাও হয়েছে।

বিষয়টি প্রসঙ্গে জানতে চাইলে ‘ক্রস বর্ডার রুট নেটওয়ার্ক ইমপ্রুভমেন্ট প্রজেক্ট’ প্রকল্প ব্যবস্থাপক মো. জাহিদ হোসেন বলেন, সড়ক ও জনপথ বিভাগ থেকে চকরিয়া উপজেলার অধিগ্রহণের আওতায় পড়া জায়গার মালিকদের জন্য ক্ষতিপূরণের সব টাকা জেলা প্রশাসনকে বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে। সেখানে কারও স্থাপনা ও ভূমির বিরুদ্ধে অভিযোগ থাকলে নিষ্পত্তি শেষে প্রকৃত মালিক ক্ষতিপূরণের টাকা পেয়ে যাবেন।

কক্সবাজার জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের ভুমি অধিগ্রহন কর্মকর্তা আবু হাসনাত মোহাম্মদ শহিদুল হক বলেন, যাদের জমি অধিগ্রহণের আওতায় পড়েছে, ইতোমধ্যে বেশিরভাগ মালিক ও অংশিদারদের হাতে ক্ষতিপুরণের টাকা বিতরণ করা হয়েছে।

তবে জমির মালিকানা নিয়ে নিজেরদের মধ্যে বিরোধ আবার আদালতে মামলা-মোকাদ্দমা রয়েছে, সেকারণে কিছু কিছু মালিক এখনো অধিগ্রহণের টাকা পায়নি।

তিনি বলেন, মামলা নিস্পত্তি হবার পর যিনি জায়গার মালিক হিসেবে বিবেচিত হবেন, পরবর্তীতে আদালতের নির্দেশে তাকেই ক্ষতিপুরণের টাকা দেবে জেলা প্রশাসন। এখনো যারা পায়নি, তাদের টাকা জেলা প্রশাসনে গচ্ছিত আছে। ##

পাঠকের মতামত: